২০১৬ সাল হতে ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হয় ভারত এবং ভিয়েতনামের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক।
কৌশলগত সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে বৃহস্পতিবার (১ অগস্ট) এক নতুন কর্ম পরিকল্পনা নিল ভারত এবং ভিয়েতনাম। মঙ্গলবার রাতেই তিন দিনের সফরে ভারতে এসেছেন ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন। এদিন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকের পর, প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বের ভূযসী প্রশংসা করেন ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন বলেন, “গত ১০ বছরে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে, ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এক আকর্ষণীয় ভূমিকা নিচ্ছে ভারত। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শক্তিগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে ভারত।” মোদীর তৃতীয় মেয়াদে ভারতীয়দের আরও উন্নতি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গে, ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী, বিজেপি ও এনডিএ-কে অভিনন্দন জানান তিনি।
তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য, ভারতকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী। ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ফাম মিন চিন বলেন, “আজ বিকেলে আপনার সময় দেওয়ার জন্য, আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য, আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এত সংক্ষিপ্ত সময়ে এবং কঠোর সময়সূচির মধ্যে, আমার ভারতে সফরের ব্যবস্থা করার জন্য, আমি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমি দুই বিদেশ মন্ত্রককেও ধন্যবাদ জানাতে চাই।”
প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে, মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজঘাটে যান ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী। মহাত্মার প্রিয় প্রার্থনা-গান, ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ গানের মধ্যে, মহাত্মার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান তিনি।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন, ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে মুক্ত এবং নিয়মাধীন করার লক্ষ্যে কাজ করতে চায় দুই দেশই। চিনের নাম না করে, মোদী জানান নয়া দিল্লি উন্নয়নের সমর্থক, সম্প্রসারণবাদের নয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও জানিয়েছেন, ভিয়েতনামকে সামুদ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য ৩০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে ভারত। প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও জানান, ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতি এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দৃষ্টিভঙ্গির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হল ভিয়েতনাম। তিনি বলেন, “আমরা উন্নয়নকে সমর্থন করি, সম্প্রসারণবাদকে নয়।” প্রসঙ্গত, বর্তমানে ইন্দো-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের সম্প্রসারণবাদী আচরণ ক্রমে উদ্বেগ বাড়ছে গোটা বিশ্বে। তার মধ্যেই, প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী আরও বলেন, গত এক দশকে বিভিন্ন খাতে ভারত-ভিয়েতনাম সম্পর্কের গভীরতা বেড়েছে। মোদী বলেন, “গত ১০ বছরে, আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার সব দিক নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছি এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার লক্ষ্যে এগোতে শুরু করেছি।” খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক