বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের মধ্যেও ভারত-রাশিয়া অংশীদারিত্ব বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ।
ভারতের জন্য পুনর্গঠিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) স্থায়ী আসনের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে রাশিয়া সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই প্রতিশ্রুতি উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে কার্যকর হবে বলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।

এই অগ্রগতি ঘটেছে জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে ভারত-রাশিয়ার ষষ্ঠ পরামর্শ সভা এবং সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ কার্যকরী গ্রুপের (জেডব্লিউজি) ১৩তম বৈঠকের সময়। ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর মস্কোতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উভয় পক্ষ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় করেছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারসহ এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাশিয়া পুনরায় ভারতের জন্য পুনর্গঠিত ইউএনএসসি-র স্থায়ী সদস্যপদে সমর্থন জানিয়েছে।

ভারত-রাশিয়া সন্ত্রাসবিরোধী যৌথ কার্যকরী গ্রুপ
জেডব্লিউজি-র বৈঠকে ভারত ও রাশিয়া সন্ত্রাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছে। এতে সীমান্তপারে সন্ত্রাস, চরমপন্থা মোকাবিলা এবং উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের অর্থায়ন রোধে সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মতি হয়। বিশ্ব ও আঞ্চলিক পর্যায়ে বর্তমান সন্ত্রাসী হুমকি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার মোকাবিলার বিষয়েও আলোচনা করা হয়।

জেডব্লিউজি-র গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ
সীমান্তপারে সন্ত্রাস: উভয় পক্ষ সীমান্ত সন্ত্রাস মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়।
সন্ত্রাসের অর্থায়ন: সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর অর্থায়ন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
নতুন হুমকি: সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা উদীয়মান প্রযুক্তির ব্যবহার মোকাবিলায় উদ্ভাবনী সমাধান ও যৌথ পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) তন্ময় লাল এবং রাশিয়ার পক্ষে উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভার্শিনিন প্রতিনিধিত্ব করেন।

রাশিয়া সফরের সময় তন্ময় লাল রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল গালুজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ইউক্রেন সংঘাতসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

উপসংহার
প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও কৌশলগত বিষয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে ভারত ও রাশিয়া তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সর্বদাই অগ্রাধিকার দিয়েছে। ২০২৫ সালের শুরুর দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফর এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সাম্প্রতিক ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের অগ্রগতি উভয় দেশের মধ্যে গভীর ও স্থিতিশীল সম্পর্কের প্রতিফলন। সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা থেকে শুরু করে জাতিসংঘে কৌশলগত সমন্বয়, উভয় দেশই পারস্পরিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সাধারণ স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। সূত্র: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক।